মুজাহিদের চূড়ান্ত রায় কাল

(অনুসন্ধান২৪.কম) একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের রায় ঘোষণা হবে মঙ্গলবার
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার সকালে এই রায় ঘোষণা করবেন। দিনের কার্যতালিকার প্রথমেই মামলা রাখা হয়েছে
এই আপিল বেঞ্চের বাকি তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিচারপতি মো. ইমান আলী
দুই পক্ষের শুনানি শেষে গত ২৭ মে আপিল আদালত রায়ের এই দিন ঠিক করে দেয়
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং সাম্প্রদায়িক হত্যা-নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়
অপহরণ, নিযার্তন হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি ঘটনায় আলবদর বাহিনীর প্রধান মুজাহিদের সংশ্লিষ্টতা ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়
বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মুজাহিদ যে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করতে গঠিত আলবদর বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন এবং ওই বাহিনীর ওপর তারকার্যকর নিয়ন্ত্রণছিল, তা উঠে আসে ট্রাইব্যুনালের রায়ে
২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরুর পর এটি চতুর্থ মামলা, আপিল আদালতে যার রায় হতে যাচ্ছে
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আশা করছেন, সর্বোচ্চ আদালতেও ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকবে
আমরা নানা রকম কাগজ-পুস্তক মৌখিক সাক্ষ্য দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি, যাতে আমরা সার্থক হয়েছি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনিরের প্রত্যাশা, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ এবার খালাস পাবেন
মামলায় আমাদের পক্ষে যেসব যুক্তি ছিল, সেগুলো আমরা সাধ্যমতো আপিল বিভাগে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমাদের উপস্থাপিত যুক্তিগুলো বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
এর আগে যুদ্ধাপরাধের তিনটি মামলায় আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায় এসেছে; দণ্ড কার্যকর হয়েছে জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের
আপিল বিভাগের আরেক রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত না হওয়ায় রিভিউ নিষ্পত্তি হয়নি
আর শুনানি চলার মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযম বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যু হওয়ায় তাদের আপিলের নিষ্পত্তি হয়ে গেছে
ট্রাইব্যুনালের রায়
মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে , , , নম্বর অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়। তবে নম্বর অভিযোগে তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়নি বলে রায়ে জানানো হয়
প্রথম অভিযোগে সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে অপরণের পর হত্যা এবং ষষ্ঠ অভিযোগে বুদ্ধিজীবীসহ গণহত্যার ষড়যন্ত্র ইন্ধনের অভিযোগে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয় এই জামায়াত নেতার
একই সাজা হয় সপ্তম অভিযোগে, ফরিদপুরের বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা-নিযার্তনের ঘটনায়
এছাড়া পঞ্চম অভিযোগে সুরকার আলতাফ মাহমুদ, গেরিলা যাদ্ধা জহিরউদ্দিন জালাল ওরফে বিচ্ছু জালাল, শহীদজননী জাহানারা ইমামের ছেলে শাফি ইমাম রুমি, বদিউজ্জামান, আবদুল হালিম চৌধুরী জুয়েল মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদসহ কয়েকজনকে ঢাকার নাখালপাড়ায় পুরনো এমপি হোস্টেলে আটকে রেখে নির্যাতন এবং জালাল ছাড়া বাকিদের হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার জন্য মুজাহিদকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আর তৃতীয় অভিযোগে ফরিদপুর শহরের খাবাসপুরের রণজিৎ নাথকে অপহরণ নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় মুজাহিদকে

No comments: