স্বাগত মাহে রামাদান মোবারক



Photo- Internet
(অনুসন্ধান২৪.কম) রোজা ফারসি শব্দ এর অর্থ হচ্ছে দিন যেহেতু এই আমলটি দিনের শুরু থেকে শেষাংশ পর্যন্ত পালন করা হয় তাই একে রোজা বলা হয়
আর আরবিতে এর নাম সাওম। যার শাব্দিক অর্থ কোনো কাজ থেকে বিরত থাকা। শরয়ী পরিভাষায় সুবেহ সাদিকের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে পানাহার স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোজা বলা হয়। দ্বিতীয় হিজরীর শাবান মাসে আরবি বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস রমজানে মুসলমানদের জন্য রোজা ফরজ হয়। আল্লাহর নবী (সা.) ওই সালের রমজান থেকে মোট বার রমজানের রোজা পালন করেন

ইসলামের রোকনগুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজার স্থান হলো তৃতীয়- যা প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ। এর অস্বীকারকারী কাফের এবং বিনা কারণে পরিত্যাগকারী ফাসেক



রোজা ভঙ্গের কারণ সমুহঃ

. ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
স্ত্রী সহবাস করলে
. কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)
. ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
. নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
. জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে
. ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
. কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
. সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
১০. পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
১১. দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
১২. ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে
১৪. রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
১৫. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।
আর যদি রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্বামী-স্ত্রী সহবাস অথবা পানাহার করে তবে কাজা কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। কাফফারার মাসআলা অভিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের থেকে জেনে নেবে


 

রোজার মাকরুহগুলোঃ

* অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা
*
কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা
*
গড়গড় করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে
*
ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গলাধঃকরণ করা
*
গীবত, গালা-গালি ঝগড়া-ফাসাদ করা। কেউ গায়ে পড়ে ঝগড়া-ফাসাদ করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার তোমাকে প্রত্যুত্থর দিতে অক্ষম
*
সাড়া দিন নাপাক অবস্থায় থাকা। এটি অত্যন্ত গুনাহের কাজ

*
অস্থিরতা কাতরতা প্রকাশ করা
*
কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার, পেস্ট মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা


 

যেসব কারণে রোজা না রাখলে ক্ষতি নেই তবে কাযা আদায় করতে হবেঃ 

*    কোনো অসুখের কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাযা করতে হবে।


*   গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাযা করে দিতে হবে
*  
যেসব স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার  অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাযা আদায় করতে হবে
*  
শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে তবে রাখাই উত্তম
*   
কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে পরে এর কাযা করতে হবে
*   
কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে তবে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব পরে তা কাযা করতে হবে
*  
হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয় পরবর্তীতে কাযা করতে হবে

 

রোজার নিয়তঃ

নাওয়াইতু আন আছুমাগাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নীকা আন্তাস সামিউল আলীম

 

ইফতারির দোয়াঃ

আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া তাওয়াক্কালতু আলা রিজক্কিকা আফতারতু বি-রহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন
 

No comments: